আজ সোমবার, ১০ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৫শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

নারায়ণগঞ্জে ব্যাটারী চালিত অটোরিক্সা ॥ গতি আছে, নিয়ন্ত্রন নেই

অটোরিক্সা

 অটোরিক্সা সংবাদচর্চা রিপোর্ট:

নারায়ণগঞ্জের ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে ব্যাটারী চালিত অটোরিক্সা এবং ইজিবাইক বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। সরকারী অনুমোদন না থাকায় সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের মহাসড়কে ব্যাটারী চালিত অটোরিক্সা ও ইজিবাইক চলাচল নিষিদ্ধ করলেও ট্রাফিক বিভাগের নাকের ঢগায় মহাসড়কগুলোতে বীরদর্পে চলছে এসব অনুমোদনহীন যানবাহন। আর এসব যানবাহনের গতি থাকলেও নিয়ন্ত্রণ না থাকায় ভাড়ী যানবাহনের সাথে পাল্লা দিয়ে চলতে গিয়ে প্রতিনিয়ত ঘটছে সড়ক দূর্ঘটনা। দূর্ঘটনার ফলে যাত্রী সাধারনকে প্রানহানীসহ পঙ্গুত্ব বরণ করতে হচ্ছে।

অপরদিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কটি রাজধানী ঢাকার যাত্রাবাড়ী থেকে নারায়ণগঞ্জের শিমরাইল মোড় পর্যন্ত ৮ লেনে উন্নীত হওয়ায় দুরপাল্লার যানবাহনগুলো বেপরোয়া গতিতে চলাচলের কারনে এ মহাসড়কটি মৃত্যু ফাঁদে পরিনত হয়েছে। আর এ থেকে উত্তরনে ট্রাফিক বিভাগকে আরো বেশি কঠোর ভুমিকা পালন করার কথা বলেছেন সচেতন নাগরিক সমাজ।

অনুসন্ধ্যানে জানা গেছে, সরকারী অনুমোদনের বাধ্যবাধকতা না থাকায় এবং রাজস্ব প্রদানের সঠিক নিয়ম না থাকায় একশ্রেনীর অসাধু অর্থলোভী ব্যবসায়ীরা নিয়ন্ত্রনহীন ভাবে ব্যাটারী চালিত অটোরিক্সা এবং ইজিবাইক তৈরী করে রাস্তায় নামিয়ে দিয়েছে। আর এসব অটো রিক্সা ও ইজিবাইকগুলো ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক ও নারায়ণগঞ্জ-লিংক রোড এবং নারায়ণগঞ্জ-শিমরাইল-ডেমরা সড়কে অবাধে চলাচল করছে। এসব সড়কগুলোতে এই বাহন গুলো চলাচল করলেও ট্রাফিক বিভাগের দায়িত্বে নিয়োজিত ব্যাক্তিরা কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় তারা আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। আর এসব যানবাহন গুলো থেকে একশ্রেনীর রাজনৈতিক দলের পরিচয়ধারী চাঁদাবাজ চক্র প্রতিদিন মোটা অংকের চাঁদাবাজী করে নিয়ন্ত্রন সংস্থাসহ সকলকে ম্যানেজ করায় সড়ক ও মহাসড়কে ব্যাটারী চালিত অটোরিক্সা এবং ইজিবাইক চালকরা আরো বেশী বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।

এসব যানবাহনগুলো সড়ক ও মহাসড়কে চলাচল করতে গিয়ে দূর্ঘটনার শিকার হতে হচ্ছে যাত্রী সাধারনকে। যার ফলে মহাসড়কে সড়ক দূর্ঘটনায় মৃত্যুর মিছিল দীর্ঘ হচ্ছে। সড়ক ও মহাসড়কে এসব ব্যাটারী চালিত অটো রিক্সা ও ইজিবাইক বন্ধে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন প্রত্যেকটি কাউন্সিলরদের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করলেও এতে আলোর মূখ দেখেনি। ফলে সাধারন মানুষ আরো বেশি নিরাশ হয়েছে।

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে চলাচলকারী জাকির হোসেন জানায়, ভাই ব্যটারী চালিত অটো রিক্সা কিংবা ইজিবাইক মহাসড়ক দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে প্রতিনিয়ত সড়ক দূর্ঘটনার শিকার হলেও ট্রাফিক পুলিশরা বাঁধা না দেয়ায় এগুলো চলাচল করে। তাই আমরা এসব দিয়ে চলাচল করি। যদি এগুলো না চলতো তাহলে হয়তো আমাদেরকে বাসে চড়েই একস্থান থেকে অন্যস্থানে যেতে হতো।

ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের তারাবো বিশ্বরোড এলাকা দিয়ে চলাচলকারী রেজিয়া বেগম জানায়, কি করবো বলুন, মহাসড়কে ব্যাটারী চালিত অটো রিক্সা ও ইজিবাইক চলাচল করছে সেজন্য দ্রুত গন্তব্যস্থলে যাওয়ার জন্য এসব যানবাহনে চলাচল করি। কিন্তু চলাচল করতে গিয়ে ভয়ও পাই কারন কখন আবার দূর্ঘটনার শিকার হই। সরকার যদি এসব বন্ধ করে দেয় তাহলে হয়তো আমরা এই রিক্সায় চড়বো না।

মহাসড়কে চলাচলকারী অটোরিক্সা চালক লিয়াকত জানায়, ভাই সারাদিন একটি অটো রিক্সার জমা ৩‘শ টাকা দিতে হয়। এলাকায় তেমন টিপ না পাইলে বিশ্বরোডে উঠি। জানি বিশ্ব রোডে অনেক একসিডেন্ট হয়। তারপরেও নিরুপায় হয়ে সংসার চালাতে গাড়ী চালাতে হয়। ইনকাম না করলে খাবো কি? রাস্তায় চাঁদা দিতে হয়, ট্রাফিকে ধরলে অনেক টাকা দিয়ে গাড়ী ছাড়াতে হয়। আমরা গরীব হয়ে পাপ করেছি। আমরা যাবো কোথায়?

এ ব্যাপারে নারায়ণগঞ্জ পুলিশ প্রশাসনের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) আব্দুর রশিদ (পিপিএম) জানায়, মহাসড়কে চলাচল নিষিদ্ধ অটোরিক্সা, ইজিবাইক ও সিএনজিসহ যত পরিবহন আছে আমরা সেগুলো প্রতিদিন আটক করে নিয়মিত মামলা দিচ্ছি এবং যেগুলো মামলার যোগ্য নয় সেগুলো আটক করে রেখেছি। আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করছি অটোরিক্সা, ইজিবাইক ও সিএনজিসহ যত নিষিদ্ধ পরিবহন মহাসড়কে আছে দ্রুত বন্ধ করার জন্য ব্যবস্থা নিচ্ছি।